ভাগ্য উন্নয়নের গল্প ১৫

মোছা: জুলেখা খাতুন

বালিপাড়া শাখা

আমি মোছা: জুলেখা খাতুন স্বামী মো: ছোলায়মান গ্রাম-বিয়ারা আউলিয়া নগর। আমি আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর বালিপাড়া শাখার বকুল মহিলা সমিতির একজন সদস্য। আমার স্বামী স্ত্রী সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাতেন আমার সংসারে বাড়তি আয়ের কোন সুযোগ ছিলনা। স্বামী অসুস্থ্য হয়ে পরলে না খেয়ে থাকতে হতো। থাকার মতো ভাল কোন বসত ঘর ছিলনা। একদিন আমার স্বামী জানতে পারলেন বালিপাড়া বাজারে আসপাডা নামে একটি সংস্থা বিনা জামানতে মহিলাদের নিয়ে গ্রুপ করে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণ বিতরন করেন। তাই আমি কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করি। এবং প্রথমে ২০০৯ সালে ১০,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে আমার স্বামী কে নিয়ে কাচা মালের ব্যবসা শুরু করি ইহাতে আমার সংসারের অভাব কেটে স্বচ্ছতা ফিরে আসে। কিস্তিতে কিস্তিতে আমার ঋণ পরিশোধ করি। ২য় বার আবার ১৪,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে ১০,০০০ টাকা ব্যবসার পুজি বৃদ্ধি করে ডালের ব্যবসা শুরু করি এবং বাকী ৪০০০ টাকা দিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে আমি নিজে সেলাইয়ের কাজ শুরু করি এর ফলে আমাদের সংসারে বাড়তি আয় হতে থাকে এবং আমার বড় মেয়েকে স্কুলে পাঠানো শুরু করি । ঋণ পরিশোধের পর ৩য় বার ঋণের আবেদন করে ২০,০০০ টাকা ঋণ গ্রহন করি। ২০,০০০টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা দিয়ে একটি টিনের ঘর তৈরি করি এবং একটি নলকুপ স্থাপন করি। এদিকে কিছু কাপড় কিনে জামা প্যান্ট তৈরি করে বাড়ীতে বিক্রি করি বাচ্চাদের কয়েকটি কবুতর ও হাঁস মুরগী কিনে দেই মেয়েরা পড়াশোনার ফাকে আমাকে কাজে সহযোগীতা করে। ৪র্থ বার ৩০,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে একটি গাভী কিনি এবং স্বামীর ব্যবসার কাজে পুজি বৃদ্ধি করি ৫ম বার আবারও ৪০,০০০ টাকা নিয়ে আরেকটি গাভী ক্রয় করি এবং পুকুরে মাছ চাষ শুরু করি। ৬ষ্ঠ বার ৪৮,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে আমার বড় মেয়েকে বিয়ে দিই। ৭ম বার আবারও ৪৮,০০০ টাকা নিয়ে কিছু ফসলের জমি বন্ধক নিয়ে চাষাবাদ শুরু করি বর্তমানে আমার সংসারে কোন অভাব নেই । আসপাডার সহযোগীতাই আমার সংসারে পবিবর্তন ঘটাতে পেরে আমি সংস্থাটিকে অত্যন্ত ভালবাসি। পেছনের দিনের কথা মনে হলে আমার চোখে পানি আসে। আমি আমার ২ হাত তুলে দুআ করি এবং আমি আসপাডা সংস্থার সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি।